ভারতবর্ষে ভৌতিক জায়গার কোন অভাব নেই ,প্রতিটি কোণে এক একটি করে ভৌতিক জায়গা আছে তার মধ্যে Dowhill একটি বিখ্যাত জায়গা। আপনি যদি দার্জিলিং ঘুরতে যান তাহলে আপনিও একবার Dowhill এর রোমাঞ্চ অনুভব করতে হবে তবে আপনার সাহস থাকতে হবে। কার্শিয়াং শহর থেকে খুব কাছে পিঠে অবস্থিত এই ডাও হয়েল অঞ্চল। এই অঞ্চলটি মূলত পাইন ও দেবদারু গাছের জঙ্গলে ঢাকা। সারা বছর এখানে কুয়াশায় ঢাকা থাকে। আঁকাবাঁকা রাস্তার মধ্য দিয়ে চলে গেছে এই রোডটি এবং বিভিন্ন পাখির সমাগম এখানে দেখা যায়। প্রকৃতিপ্রেমী ফটোগ্রাফার এবং যারা নির্জনতা খুব ভালোবাসে তাদের এক উপযুক্ত স্থান হলো ডাওহিল। এখানে সেন্ট্রাল ওয়াইল্ড লাইফ স্যাংচুয়ারি এবং সেনচিল লেক যা পর্যটকদের কাছে আকর্ষণ।
Dowhill এর পরিচিতি
দার্জিলিং জেলার কার্শিয়াং শহরের পাশে এক ছোট্ট রোমাঞ্চকর জায়গা হল Dowhill । ব্রিটিশ আমলের তৈরি এই জায়গাটি তাদের স্থাপত্য ও ঐতিহ্যের প্রকাশ দেখা যায়। এই জায়গাকে অনেকে Hunted Hill বলে থাকে। এখানে বর্ষাকালে মেঘের আনাগোনা, ঝরনার শব্দ আর নিস্তব্ধতা দেখা যায়।
দার্জিলিং জেলার কার্শিয়াং শহরের কাছে Dowhill (দাওহিল) হল শান্ত সবুজে ঘেরা পাহাড়ি অঞ্চল। এটি বিখ্যাত ভৌতিক পরিবেশের কারণে সবাই এই ভৌতিক আনন্দ উপভোগ করার জন্য এখানে গিয়ে থাকে। Dowhill Road টা জঙ্গলের মধ্য দিয়ে আস্তে আস্তে করে উপরের দিকে উঠে গেছে এবং এই রাস্তাটি শেষ হয়েছে Voctoria Boy’s School (ভিক্টোরিয়া বয়েজ) স্কুলে। এই স্কুলটি নাকি ভূতের আস্তানা। Victoria Boy’s School and Dowhill Girls School নাকি ভূতের আদি বাসস্থান। আশিরিরি আত্মারা এখানে ঘুরে বেড়ায়। পায়ের আওয়াজ পাওয়া যায়। স্কুল দুটি বন্ধ থাকলেও স্থানীয়রা মাঝে মাঝে দেখতে পায় স্কুলে আলো জ্বলছে এবং তারা যেন যাতায়াত করছে। স্থানীয় লোকেদের কথায় জানা যায় বহুদিন আগে বহু মানুষের অজ্ঞাত কারণে মৃত্যু হয়েছিল। তাদের আত্মারা আজও ঘুরে বেড়ায়। যখন স্কুল চলত শীতকালে চার মাস স্কুল বন্ধ থাকতো কিন্তু স্থানীয়রা দেখতো স্কুলের হোস্টেলে লাইট জ্বলছে এবং চলাফেরার আওয়াজ পাওয়া যেত।
Dowhill এর ভৌতিক গল্প
কার্শিয়াং এর দাও ফিল্ম মুল আকর্ষণ হলো ভৌতিক পরিবেশ। শুধুমাত্র ভৌতিক পরিবেশ ও গা ছমছম করা প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের কারণে এখানে পর্যটক আসেন।
হেডলেস বয় (Headless Boy) – স্থানীয় লোকেরা বলে এখানে একটি মুন্ডু হীন বাচ্চা ঘুরে বেড়ায় এবং সেটা স্থানীয়রা অনেকে দেখেছেন। অনেক আগে এখানে একটি বাচ্চার মাথা কেটে খুন করা হয়েছিল সেই থেকে এ কাহিনীটি এই এলাকার পরিচিত ঘটনা।
ভূতের হাঁটা -ভিক্টোরিয়া বয়েজ স্কুল থেকে ডাওন ফরেস্ট পর্যন্ত একটা ছোট রাস্তা আছে যাকে Ghost Road বলে ডাকে স্থানীয়রা। এই রাস্তায় অনেক সময় ছায়া চলাফেরা করে, কথা বলার আওয়াজ আর অদৃশ্য কিছু দেখতে পাওয়া যায়।
রাতের পদচারণা– স্থানীয় মানুষ এবং পর্যটকরা যখন ওই এলাকায় সন্ধ্যার পর ঘোরাফেরা করে তখন তারা বুঝতে পারে যে তাদের সাথে পিছনে কেউ হাঁটছে কিন্তু যখন তারা পিছন ফিরে তাকায় তখন দেখে পেছনে কেউ নেই এটি এখানকার পরিচিত ঘটনা।

Read More :- Kalimpong’s Historic Morgan House : কালিম্পং-এর ঐতিহাসিক ভুতুরে মরগ্যান হাউস!
How to Go (কিভাবে যাবেন) ?
Dowhill (ডাওহিল) যেতে গেলে আপনাকে প্রথমে দার্জিলিং জেলায় পৌঁছতে হবে। দার্জিলিং থেকে ৩০ মিনিটে মধ্যে গাড়িতে করে পৌঁছে যাবেন কার্শিয়াং শহর এবং কার্শিয়াং শহর থেকে মাত্র ৫ কিলোমিটার দূরে ডাহীন অঞ্চল। কলকাতা থেকে বিমানবন্দরের মাধ্যমে বাগডোগরা এবং সেখান থেকে এনজিপি (NJP) হয়ে যেতে পারবেন। যদি ট্রেনে করে যান তবে কলকাতা থেকে নিউ জলপাইগুড়ি জংশনে গিয়ে সেখান থেকে গাড়িতে করে কার্শিয়াং হয়ে Dowhill যাওয়া যায়।
Dowhill এ দেখার মতো স্থান :
- ডাউহিল ফরেস্ট
- ডাউহিল বোয়েজ স্কুল
- ভিক্টোরিয়া বয়েজ স্কুল
- ঈগলস ক্র্যাগ (Eagle’s Crag)
Dowhill এ পর্যটকদের জন্য পরামর্শ
> যারা Horor বা ভৌতিক গল্পে আগ্রহী, তাদের জন্য এটি দারুন অভিজ্ঞতা ।
>রাতে একা ঘোরাঘুরি করা এড়িয়ে চলা।
>পর্যাপ্ত উষ্ণ কাপড় নিয়ে যান, কারণ আবহাওয়া ঠান্ডা।
>স্থানীয় গাইড থাকলে ভালো হয়, যারা গল্পগুলো জানেন।
দার্জিলিং শহরের এই পার্বত্য অঞ্চল প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের ভরপুর । এটি একটি রোমাঞ্চকর জায়গা যা কিনা অন্য কোথাও পাওয়া যায় না সেই জন্য মানুষ বারবার এই জায়গায় আসে।যে সমস্ত পর্যটকরা একটু ভিন্ন স্বাদ পছন্দ করে তাদের জন্য এটি একটি উপযুক্ত জায়গা।